Facebook Ad

Facebook Ad
E-commerce shop ad

আমার কম্পিউটারই যখন আমার অফিস

computer desk
আমরা সত্যিই সৌভাগ্যবান যে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেট-এর যুগে বাস করছি। আমার একটা অফিস আছে আর সেটা আমার কম্পিউটার মধ্যেই থাকে। আমি একটা স্মার্টফোনের মাধ্যমে সেটা আমার পকেটেও নিয়ে আসতে পারি। কারো কম্পিউটারের মধ্যে অফিস থাকার অনেক সুবিধা রয়েছে। কিন্তু তার আগে আমি আপনাদেরকে একটা ছোট্ট ঘটনা বলতে চাই।

কিছু মাস পূর্বে আমার দাঁতে সমস্যা থাকার কারণে এক ডেন্টিস্টের কাছে যাই । উনার চেম্বার টা খুব ছোট ছিল, প্রায় ১২ বাই ১২ ফুট রুম হবে। রুমে একটা টেবিল, কিছু চেয়ার, রোগীর জন্যে বেড,ল্যাপটপ সংযুক্ত টেবিল, একটা মাউন্টেড মেশিন আর আরো অনেক খুটিনাটি জিনিসপত্র। টেবিলে অসংখ্য ডাক্তারি সরঞ্জাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।
এখন আমি এসব দেখে এটাই চিন্তা করছিলাম যে, এখন ডাক্তার সাহেবের যদি অফিস স্থানান্তর করতে হয় তবে তার কত ঝামেলা হবে। যদি ডাক্তার সাহেবের পূরো অফিসটি একটা ছোট জিনিসে ভরে নেওয়া যেত?
হ্যাঁ আমাদের দেশে এই ধরনের অনেক চেম্বার রয়েছে কিন্তু এগুলোর কথা বলছি না,ডাক্তার, উকিল, ইঞ্জিনিয়ার এরা সবাই ফ্রিল্যান্সার বা পেশাদার কর্মী। এদের বেশিরভাগই এক পর্যায়ে এসে চাকরী ছেড়ে দিয়ে নিজের প্রাইভেট অফিস চালান। এখন আপনার উচিত সবার মত গতানুগতিক পথ অনুসরণ না করে নতুন ও আধুনিক কিছু করা। একমাত্র এভাবেই আপনি কেবল প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে পারবেন।
এখন যেহেতু আমার পেশাটা অনলাইন নির্ভর আর আমি সেখানে বেশ সফলও বটে -আমার মনের ভিতরেও ইচ্ছে ছিল একটা বাস্তব অফিস হবে, কর্মচারী থাকবে আর অন্যদের দেখাবো যে আমিও কিছু একটা হয়ে গেছি। কিন্তু পরক্ষণেই আমি ভাবলাম যে, এটা একটা সনাতন ধারার চিন্তা। কারণ আমার কাজটা ১০০% অনলাইন নির্ভর। অনলাইনে কাজ করার প্রথম লক্ষ ছিল যেন আমাকে ৯টা থেকে ৫টা অফিস করতে না হয়। তাই এই বুদ্ধি বাদ দিয়ে দিলাম আর আমার সব সরঞ্জাম অনলাইনে নিয়ে আসলাম।
আমার কম্পিউটার আমার অফিস হওয়ার যেসব লাভ আমি পাচ্ছি তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এখানে উল্লেখ করলাম,

অফিসের কোন জায়গা বা ভাড়া লাগেনা
একবার চিন্তা করে দেখুন একটা অফিস না থাকায় মাসে আমার কত টাকা বেচে যায়? ঢাকা শহরে একটা ভালো অফিস এর জায়গা ভাড়া পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। তাই আমি শুধু যে ভাড়ার টাকাই বাঁচাচ্ছি তাই নয় আমি আমার দুপুরের লাঞ্চ-এর টাকা ও ফার্নিচার-এর টাকাও বাঁচাচ্ছি।

আমার কোন কর্মচারী নেই তাই এ জাতীয় কোন ঝামেলাও নেই
আমার বিজনেস একটা স্বনির্ভর বিজনেস আর আমি একাই এতে সর্বেসর্বা। আমার ভাইবোনরাই মাঝে মধ্যে আমার জন্য স্ব-বেতনে কাজ করে। এছাড়া আমার কোন সাহায্য প্রয়োজন হলে তা আমি আউটসোর্স করে নিই আর তাদের চুক্তি অনুসারে টাকা দিয়ে দিই। তাই আমার কোন সুন্দরী রিসিপশনিস্ট, সেক্রেটারী কিংবা চা বানানোর জন্যে পিয়ন রাখার প্রয়োজন নেই। বিশাল বড় অফিস আর একদল চাকর বাকর নিয়ে আমাকে কারো ইমপ্রেস করার দরকার নেই।

আমার কোথাও যাতায়াত করা লাগেনা
আমি কোথাও পড়েছিলাম যে এক গবেষণা অনুযায়ী আমরা দিনের প্রায় ৪ ঘন্টা যাতায়াতেই ব্যয় করি। এর মধ্যে আরো আছে বৃষ্টিতে ভেজা, কাদা পানিতে পা ডুবিয়ে হাটা; কনকনে শীতে আর ঠান্ডা বাতাসে জমে যাওয়া; অথবা প্রচন্ড গরমে ঘামতে থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করা। আর এরপর আমরা দূষিত বাতাস গ্রহণ করি আর ট্রাফিক সিগনালে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় নষ্ট করি। আমি সেই অতিরিক্ত সময়টুকু আমার বিজনেসের কাজে লাগাই আর বাকিটা আমার পরিবারের সাথে ব্যয় করি।

আমার কোন রক্ষণাবেক্ষন খরচ লাগেনা
আমার যদি একটা অফিস থাকত, তাহলে আমাকে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির বিল দিতে হতো। আর যদিও কিছু অফিসে গ্যাস ও পানির বিল দেওয়া লাগেনা তবুও তাদের আরো কিছু বাড়তি খরচ দিতে হয়, যেমন- ইন্টারনেট বিল, দারোয়ানের বেতন, অফিস মেইনটেনেন্স ইত্যাদি। আমার কম্পিউটার অফিস হওয়ায় আমি এসব খরচ থেকে মুক্ত। আমার যা যা ব্যয় হয় সেগুলো হলো- কম্পিউটারে (যদি রিপেয়ার করতে হয় তার খরচ) আর আমার ইন্টারনেট বিল এর খরচ।

আমি যেখানেই যাই সেখানে অফিসটাকেও সাথে নিয়ে যাই
একটা বাস্তব অফিস আপনাকে অনেকটা পঙ্গু করে দেবে। আপনি বেশিদিন অফিস থেকে দূরে থাকতে পারবেন না। আপনি যখন ছুটিতে যাবেন আপনার কাজ ও আয় তখন বন্ধ থাকবে। কিন্তু আমার অফিস আমার কম্পিউটারের মধ্যেই আছে,এছাড়া কোথাও গেলেও আমি আমার মোবাইলের মাধ্যমে কাজ গুলো করতে পারি । এর ফলে আমি ছুটিতেও কাজ করেছি আর ইনকামও করেছি। আমার অফিসটা বেশ হালকা এবং সাথে করে যেখানে সেখানে নিয়ে যাওয়া যায়।

আমার বিজনেস স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে

আমার ওয়েবসাইট  দিনে ২৪ ঘন্টা আর সপ্তাহের ৭ দিনই চলতে থাকে। একে বলে অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি। এটা নিজেই নিজের কাজ করে চলেছে আমার আর আমার টাকা আয় হচ্ছে। শুধু আমার সময়ে সময়ে এটাকে দেখে শুনে রাখতে হয় যে সব ঠিকমত চলছে কিনা।

আমার অফিসের রুটিন ধরে চলতে হয়না

একটা বাস্তব অফিস এবং কর্মচারী থাকলে আপনাকে অনেক টাইম টেবিল রক্ষা করতে হবে। কিন্তু আপনার কি মনে পড়ে না, এ ধরনের জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যেই আপনি অনলাইনে কাজ শুরু করেছিলেন? আমি যখন খুশি তখন কাজ করব আর আমি যখন খুশি তখন ছুটি নিব। আমার কোন রুটিন মানতে হবে না।

আমাকে কোন ট্যাক্স দিতে হয়না

ইন্টারনেট বিজনেস একটা এক মালিকানা ব্যবসা। আর একক মালিকানাধীন ব্যবসা শুরু করতে কোন প্রকার আইনগত কাগজপত্র লাগেনা। আর ইন্টারনেট বিজনেস কোন ট্যাক্স-এর আওতায়ও পড়েনা। ইন্টারনেট বিজনেস সারাবিশ্বে একটি নতুন বিষয়, তাই এখনো পর্যন্ত এ ধরনের বিজনেসের কোন প্রকার আইন প্রণীত হয়নি। তাই যতদিন সময় আছে আপনি কর অবকাশে এই ব্যবসাটি করে যেতে পারবেন।

তবে আর অপেক্ষা কিসের ?
এখনি সময়, আপনার কাছে ইন্টারনেটনামক প্রয়োজনীয় হাতিয়ারটি রয়েছে। আপনি যদি এখনি কিছু না করেন, তাহলে এক সময় আপনি আপনার বংশধরকে বলবেন, “আমার কাছে ইন্টারনেট ছিল, কিন্তু সেসময় আমি এটাকে কোন কাজে লাগাতে পারিনি। তাই আর দেরি না করে ইন্টারনেটকে কাজে লাগান করে ফেলুন কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপকে করে ফেলুন নিজের অফিস।
Powered by Blogger.